
ভোট বর্জনে বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে কেউ বাধা দিতে পারবে না : ইসি


স্টাফ রিপোর্টার
ভোট বর্জনে বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে কেউ বাধা দিতে পারবে না। গতকাল সোমবার নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এমন মন্তব্য করেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। বিএনপি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় থেকে ভোট বর্জনের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। যার অংশ হিসেবে চলমান উপজেলা নির্বাচনও বর্জন করেছে। ভোটারদেরও বর্জন করার জন্য লিফলেট বিতরণ করছে। বিষয়টি নিয়ে মো. আলমগীর বলেন, এটা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রক্রিয়ার অংশ। যেকোনো দল ভোটে অংশ নিতে পারে, বিরত থাকতে পারে, ভোটারদেরও আহ্বান করতে পারে। তবে সেটা যেন শান্তিপূর্ণভাবে হয়। তিনি আরও বলেন, ভোট বর্জনের জন্য সহিংস কর্মকাণ্ড করলে সেটা তো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নেবে। শান্তিপূর্ণভাবে তারা প্রচার করলে কেউ বাধা দিতে পারবে না। গত ৮ মে প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচন হয়েছে। ২১ মে দ্বিতীয়, ২৯ মে তৃতীয় ও ৫ জুন চতুর্থ ধাপে ভোটগ্রহণ হবে। প্রথম ধাপের নির্বাচনে ৩৬ দশমিক ১ শতাংশ ভোট পড়েছে। এজন্য বিএনপির ভোট বর্জননীতিকেও দায়ী মনে করছে কমিশন। নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, ভোট কম পড়ার পেছনে একটি বড় ফ্যাক্টর বিএনপি। কারণ তারা ভোট বর্জন করায় তাদের কর্মী, সমর্থকরা ভোট দিতে কেন্দ্রে আসছেন না। তবে বিএনপি একমাত্র ফ্যাক্টর না। তিনি বলেন, ভোটের হার বেশি হলে আমরা খুশি। কিন্তু না হলে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নাই। গতকাল সোমবার নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। এর আগে ৮ মে প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করবে। ভোটাররাও আগের নির্বাচন যেহেতু শান্তিপূর্ণ হয়েছে, তাই দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে স্বাচ্ছন্দ্যে ভোট দিতে পারবে। ধান কাটা তো শেষ এখনো কি ভোট কম পড়বে বলে মনে করেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপনারা যেভাবে বলছেন বিষয়টাতো এ রকম নয়। আরও তো কারণ আছে। ভারতের যে নির্বাচন হচ্ছে সেখানে সব দলগুলো অংশ নিয়েছে। তারপরও ৬০ শতাংশের মতো ভোট পড়েছে। আমাদের যে প্রথম ধাপের নির্বাচন হলো ওইদিন সকালে বৃষ্টি ছিল, ধান কাটা ছিল, একটি বদ দল নির্বাচনে অংশ নেয়নি। এই তিনটা কারণ তো আছেই। এছাড়াও আরও অন্যান্য কারণ আছে হয়তো, সেগুলো হয়তো আমরা জানি না। আবার স্থানীয় নির্বাচনে অনেকেই কর্মস্থল থেকে এসে ভোট দিতে চান না। এটাও একটা কারণ। ভোটের হার দিন দিন নিচে নামছে, এর দায় আপনারা দলগুলোর ওপর দিচ্ছেন, ইসির কোনো দায় আছে কি, এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি আলমগীর বলেন, আমাদের প্রথমেই দায় দিতে হবে ভারতের ওপর। কেননা, সেখানে সব দল অংশ নিচ্ছে, নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই, নির্বাচন কমিশনের আন্তরিকতা নিয়ে কোনো সমস্যা নাই, কোনো বিতর্কও নাই। কিন্তু সেখানে ৬০ শতাংশ ভোট পড়ছে। তাহলে এখানে কি নির্বাচন কমিশন দায়ী। সেটা আপনারা যদি বলতে পারেন ভারতের নির্বাচন কমিশন দায়ী, তাহলে আমরাও দায়ী। তাদের দায়ী না করলে আমরাও দায়ী না। তাদের গণতন্ত্র আর আমাদের গণতন্ত্র কি এক? এ বিষয়ে মো. আলমগীর বলেন, তাদের গণতন্ত্র, আমাদের গণতন্ত্র একই। সংবিধানও অনেকটা একই রকম। ভারতে যে কারণে ভোটের হার কমে যাচ্ছে আমাদের এখানেও একই কারণ। শুধু বাংলাদেশ নন সারা পৃথিবীতেই একই রকম। এটা কেন হচ্ছে তা গবেষণার বিষয়। সাবেক এই ইসি সচিব বলেন, ভোট পড়ার হার কম হওয়ার জন্য দায়ী কমিশনও না, অন্য কেউও না। কারণ হলো যে বিভিন্ন কারণে ভোটাররন ভোট দিতে চান না। দ্বিতীয় নির্বাচনে কেমন কাস্টিং হতে পারে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২১ মে কেমন আবহাওয়া থাকবে, প্রার্থীর জনপ্রিয়তা কেমন এসবের ওপর নির্ভর করবে। ভোটের হার বেশি হলে আমরা খুশি, কিন্তু নাহলে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। ওই নির্বাচন কমিশনার বলেন, আমরা সবটাতেই সন্তুষ্ট। কেননা, ভোটের হার টার্গেট করা নেই। ফ্রান্সের নির্বাচনে যেমন বলা আছে এত শতাংশ ভোট না পড়লে আবার নির্বাচন হবে। তুরস্কে আছে। পৃথিবীর অনেক দেশেই আছে এর কম। তাদের সংবিধানে যেটা বলে দিয়েছে যে এত শতাংশ ভোট পড়তে হবে, সেটা না হলে ফের নির্বাচন হবে। আমাদের এ রকম আইন নেই। তাই যে হার হলেই আমরা খুশি। ভোটের হার বাড়ানোর কোনো উদ্যোগ নেবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা ইসির কাজ না। অনেক গবেষণা প্রতিষ্ঠান আছে যারা স্থানীয় সরকার নিয়ে কাজ করে, তারা গবেষণা করে প্রতিবেদন সরকারের কাছে দেবে। আমাদের গবেষণা করার দক্ষতা বা সক্ষমতা নেই। আমরা গবেষণা করলে সেই গবেষণা তো আপনারা বিশ্বাস করবেন না। গবেষণা করতে হবে তৃতীয় পক্ষ থেকে।
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ